চিরকুট লিখে ছন্দা রায় নামের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রী ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মুগদা থানার মানিকনগর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুগদা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
তবে ছন্দার ‘আত্মহত্যার’ বিষয়টি মানতে নারাজ তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা।তাদের দাবি এটা পরিকল্পিত ‘হত্যা’। তাই এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ছন্দার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। তিনি রাবির অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার স্বামীর নাম উত্তম কুমার। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত। স্বামীর সঙ্গে ঢাকার মুগদায় ভাড়া বাসায় থাকতেন ছন্দা।
ছন্দার স্বামীর ভাষ্যমতে, সোমবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যবর্তী সময়ে নিজ কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ছন্দা। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছন্দার পরিবার জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে ছন্দা একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে। তাতে লিখা আছে- ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ এবং ছন্দার হাতের লিখার সঙ্গে সেই লেখার মিল রয়েছে।
এ বিষয়ে মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নবেন্দ্র কুমার বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা এটিকে আত্মহত্যা বলে বিবেচনা করছি। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তখন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এ ঘটনায় নিহতের পারিবার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে ছন্দার এই ‘আত্মহত্যা’র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেছেন রাবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ছন্দার সহপাঠী আরিফা আক্তার মিলি বলেন, নিশ্চয়ই ছন্দার কোনো মানসিক কষ্ট ছিল। আর ও হয়ত কারও সঙ্গে সেটা শেয়ারও করতে পারেনি। এজন্যই আমরা চাচ্ছি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক।
বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ছন্দার আত্মহত্যার বিষয়টি আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। সে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে। কাজেই আমরা এটাকে আত্মহত্যা বলতে পারি না। নিশ্চয়ই এর পিছনে অন্য বিষয় লুকিয়ে আছে। আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত হোক।